Sunday, September 11, 2011

আবজাব দিনলিপি

অদ্ভুত অদ্ভুত কতগুলো কাজ করতে মন চাচ্ছে ইদানিং।
১, মন চাচ্ছে লিখতে। অথচ লেখা আসছে না। রাইটার হবার নামগন্ধ না থাকতেই রাইটার'স ব্লক... হা হা...
২.বাইরে কোথাও ঘুরতে যেতে ইচ্ছা করছে, আবার করছে না। ইচ্ছা করছে একটু কোথাও গিয়ে ঘুরে আসি। শেষ বিকেলের হালকা রোদে...।
আশ্চর্য! আমি অনেকদিন কোথাও যাই না।
অথচ আগে কোথাও যাবার ন্যুনতম সুযোগ পেলেই লাফালাফি শুরু করে দিতাম।
আর ছিল দুপুর রোদে ঘোরা। আমার 'মোটামুটি রূপসচেতন' বান্ধবীও আমার পাল্লায় পড়ে শেষমেষ খটখটে দুপুর রোদে চন্দ্রিমা উদ্যানে গিয়ে বসে আমার সাথে অলস আড্ডা দিত আর মানুষ দেখে বিশ্লেষণ করত।
সেইসব দিন কোথায় গেছে জানি না....

এখন রোদে বসার কথা চিন্তা করলেই মাথা ধরে যায়। সামান্য রোদ মাথায় পড়লেই বাসায় এসে ফ্ল্যাট হয়ে পড়ে যাই। রৌদ্রবিলাসের দিন আর নাই :(..........

৩.কয়েকদিন ধরে আরেকটা বাচ্চা-টাইপ ইচ্ছা ঘুরছে মাথায়.... 'টেস্টি হজমী খেতে হবে'.... :D
এই কথা শুনে হাসলে দশ টাকা জরিমানা।
আমি কিন্তু হাসির কথা বলতেসি না।
টেস্টি হজমী খেতে মন চাচ্ছে অথচ খেতে পারছি না..... কী বেদনাদায়ক ব্যাপার!

৪.সবাইকে খুব গিফট করতে মন চাচ্ছে। কাকে কী গিফট করলে সে খুব খুশি হয় এইসব ভেবে আর চোখ বুঁজে কল্পনা করেই একটা অদ্ভুত আনন্দ হচ্ছে।
এমনিতে আমি বেশ কিপ্টা স্বভাবের মানুষ। সহজে টাকা খরচ করি না। কিন্তু মাঝে মধ্যে ইচ্ছা করে চোখ বন্ধ করে টাকা খরচ করি। কিন্তু করি না। :(
টাকা জমানোর মধ্যে যেমন আনন্দ আছে, তেমন খরচ করার মধ্যেও আনন্দ আছে.......

৫.ফোটোগ্রাফি করতে মন চাচ্ছে.....
কিন্তু
ক্যামেরা নাই।
:-|
'নাই' এর উপর তো আর কথা নাই।

৬.খুব ছবি আঁকতে মন চায় আজকাল।কিন্তু আঁকতে গিয়ে দেখি ধৈর্য থাকছে না। ছবি আঁকার ক্ষেত্রে ধৈর্য সমস্যা আগে ছিল না। কিন্তু আজকাল হচ্ছে।
আর সমস্যা হচ্ছে, পেন্সিলে আঁকতে মন চায় না। ওয়াটার কালার চেষ্টা করে ছাড়ান দিয়েছি....
এখন ইচ্ছা হচ্ছে অয়েলে ছবি আঁকতে। কিন্তু অয়েলে আঁকা এত ডাল-তরকারী লেভেলের সস্তা কাজ না...
কঠিন আছে।
আসলে ডাল-তরকারী রান্না করাও সোজা কাজ না।
কোন কাজই সুন্দরভাবে করা সহজ না।

৭. টিভি সিরিয়াল Merlin এর নিয়মিত দর্শক আমাদের বাসার সবাই। 4th season  রিলিজ হবে অক্টোবরে। কিন্তু এখনই দেখতে মন চাচ্ছে।
..............................................
আর কিছু কি লেখার আছে?
হয়ত আছে....
হয়ত নাই...

আমি যা লিখতেসি... এইসব আজাইরা প্যাঁচাল লিখতে চিন্তা ভাবনা করা লাগে না।
..................................
ডায়রি লেখার চেয়ে আজকে ব্লগ লিখে এক ধরনের আরাম পেলাম।
হাবিজাবি কথা ডায়রিতে লিখতে মন চায় না। ডায়রিতে লিখি সিরিয়াস আলাপ-সালাপ। কিন্তু এখানে আবজাব লিখি। ডায়রি হল পুরনো বন্ধুর মত, নতুন কথা আর বিশেষ কী বলব?
ব্লগ সেই তুলনায় নতুন বন্ধু। তার সাথে বিভিন্ন পুরনো বিষয়ে নতুন করে আলাপ করা যায়।
মানুষের একটা না একটা কিছু নিয়ে কথা বলতে হয়। এই যেমন সেদিন আমার বান্ধবী এল। ও যা বলে আমি জানি, আমি যা বলি ও-ও জানে.... সব পুরনো প্যাঁচাল। শুধু আকারটা নতুন। আমার জীবনে যেমন পরিবর্তন আসে নাই কোন, ওরও আসে নাই। নিস্তরঙ্গ জীবন। দেখা হলে কী কথা বলব আর?
সব পুরনো কিসিমের আলাপ।
প্রথমে কিছু ব্যক্তিগত সুখ-দু:খের আলাপ (তার মধ্যে সুখের আলাপ বলতে এটুকুই যে 'সুখ নাই'), তারপর আছে কিছু হতাশার আলাপ, তারপর হয় কিছু পারিবারিক সমস্যা নিয়ে কথাবার্তা (তাতে আলোচিত হয় আমাদের দু'জনের পরিবারে আমরা দু'জনই কত ভালো, অন্যরা কত  খারাপ... ইত্যাদি)।
লম্বা একটা ছুটি গেল। ছুটিতে চুটিয়ে একটা কাজই করলাম।
টিউশনী(আর অবশ্যই আলসেমী। কিন্তু সেটা তো আর বলার অপেক্ষা রােখ না)।

টিউশনী কাজটা একটা ভয়াবহ কাজ। স্টুডেন্টদের কাছে expectation তৈরী হয়ে যায়। আর কিছুদিন যাবার পর স্টুডেন্ট এর parent রা সময়মত টাকা দিতে গরিমসি শুরু করে। এটা একটা নিয়মিত পর্যায়বৃত্তিক ব্যাপার। সব স্টুডেন্ট এর ক্ষেত্রেই এটা ঘটে। প্রথমদিকে মাসের শুরুতে টাকা (গরম গরম... :)... এরপর আস্তে আস্তে 'আন্টি'রা 'সময় পায় না', 'খুব ব্যস্ত থাকে', 'ভুলেই যায়'..... আর তাছাড়া সম্পর্কও কিছুটা ইনফরমাল হয়ে আসে। এভাবেই দুই তিন তারিখ থেকে গড়াতে গড়াতে payment  এর date  পিছাতে শুরু করে এবং শেষপর্যন্ত মোটামুটি আট-দশ তারিখে এসে ঠেকে। এটা অনেকটা গরম গরম চা মুখে দেয়ার মত হয় তখন। না যায় ফেলা, না যায় গেলা। মাঝখান দিয়ে মুখ পোড়ে। স্টুডেন্টকে তো ফট করে ছেড়ে দেয়া যায় না। ছাত্রজীবনে হাতখরচ একটা মৌলিক চাহিদা। আর টাকা হাতে একবার আসা শুরু করলে কিছুতেই 'না আসাটা' মেনে নেয়া যায় না।
বড়ই সমস্যা!
ভালো হত বাড়িওয়ালারা যেভাবে দারোয়ান বদলায় সেভাবে ছাত্র-ছাত্রী বদলাতে পারলে। দুই-তিন মাসের বেশি না। সম্পূর্ণ ফরমাল, শুধু অর্থনৈতিক লেন-দেন। হা হা.......
আসল ঘটনা হল, আমার ছাত্রী সম্প্রতি আমার এবং তার যৌথ প্রচেষ্টাকে মোটামুটি ব্যর্থ প্রমাণ করে দিয়ে পরীক্ষাতে অনেক কম পেয়েছে। মূল সমস্যাটা আসলে সমাধানযোগ্য না। মূল সমস্যা হল It's too late. সময় নাই এখন। সে পড়ে ক্লাস টেনে। তাকে কখন আমি ইংরেজি ভাষা শেখাবো? এটা তো কোন  exact science না যে অল্প সময়ে বুঝিয়ে দিলেই সূত্রে ফেলে বাকিটা করে নেবে। ভাষা তো ওভাবে শেখা যায় না। বেচারাকে ভয় পেতে দেখে সত্যি খারাপ লাগছে। কিন্তু কী করার আছে?
..................................
বাহ আমি তো বেশ একখানা লম্বা পোস্ট দাঁড় করিয়ে ফেলেছি!
আরেকটা পোস্ট লিখে ড্রাফট করে রেখেছি। পোস্টটা পছন্দ হচ্ছে না। পানসে লাগছে।
লেখাকে টেস্টি বানানোর পদ্ধতি কী?
ঘি ঢালতে হবে?
ইয়েস, গরম ধোঁয়া ওঠা ভাতে এক চা-চামচ সত্যিকারের ঘি (যেসব ভেজাল ঘি তৈরি হচ্ছে আজকাল, সেসব না), আর এক চিমটি লবণ। ও হ্যা, আর যদি আলু ভর্তা থাকে সাথে তাহলে আরো ভালো।
আহ.... জিভে জল আসছে । আমার লেখা রেসিপির গুণে না। আসলে রাত বারোটা বেজে গেছে, এখনো খাইনি। খিদে লেগেছে।

এখন খেতে যাই । আর এই uncut, uncensored, raw ব্লগটাও পোস্ট করে ফেলি। এত ভেবে যদি লিখতে যাই তাহলে আর লেখাই হবে না। আর আমার লেখা হল পৃথিবীর বৃহত্তম গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। :D
আমি না লিখিলে কে করিবে উদ্ধার এই দেশ?
এখন বিবিধ পারিবারিক সমস্যা শুরু হয়েছে....... আর লেখা যাবে না।
উঠি।
[ওহ... লেখার সাথে একটা পেইন্টিং এর ছবি দিলাম। আমার খুব পছন্দের একটা ছবি।
আর সবাই আমার মেজো দাদার জন্য দোয়া করবেন, উনি আজ মারা গেছেন। ]

5 comments:

  1. porlam..........amaro ei type problem hochchhe ajkal-kichhui kora hoye uthchhe na.
    chhobita nice....

    ReplyDelete
  2. amaro dinkal valo jaccena.akgheye jibon......
    amio akta meyeke amas theke poracchi.poraia ter pailam je kauke porano kotota biroktokor.

    ReplyDelete
  3. আপনার লেখা পড়ে খুব মজা পেলাম। জীবন্ত আবজাব লেখা। অনেক অনেক থিঙ্কিং স্টাইল আমার সাথে মিলে যায়। ভালো লাগলো। স্পেসিফিক করে তাই কিছু বললাম না

    ReplyDelete
  4. নািদরা, ঠিকই। পড়ানো শুরু করো, দেখবে চুল পাকাও শুরু হয়ে যাচ্ছে। আমার অলরেডি শুরু হয়ে গেছে...
    স্বপ্নচারী,থিঙ্কিং স্টাইল মিলে যায় শুনে একটা স্কুল-লাইফ ঠাট্টা মনে পড়ে গেল, Great minds think alike... স্কুলে হঠাৎ হঠাৎ কারো সাথে খুব মিল খুঁজে পেলে আঁতলামী করে আমরা ফ্রেন্ডরা এই কথাটা বলতাম। :)

    ReplyDelete

What do you think?